ফেসবুকে এসব কী লিখেছো? তোমার বুদ্ধি-বিবেচনা, জ্ঞান-বুদ্ধি সব কি লোপ পেয়েছে? তোমার কি লাজ-লজ্জা, আক্কেল-শরম কখনো হবে না? মানুষ এত বেহায়া হয় কী করে?
ফোন রিসিভ করার পর ঢেউয়ের মতো ভেসে আসতে থাকে উত্তপ্ত শব্দমালা। যেন আমাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে না দেওয়া পর্যন্ত শান্তি পাবে না। প্রথম ধাক্কাটা সামলে নিয়ে আমি কোনো রকমে বললাম, কেমন আছো তুমি?
কেমন আছি মানে? তা জেনে তুমি কী করবে? তুমি কি আমাকে সুখে-শান্তিতে থাকতে দেবে না? তোমার কাছ থেকে কি পরিত্রাণ পাবো না? কেন তুমি এমন করলে?
এত দিন পর তোমার সঙ্গে কথা হচ্ছে, কোথায় কুশলাদি জানতে চাইবে, তা নয়, তুমি তো আগের মতোই আগুনের হলকা ছড়াচ্ছো।
তোমার মতো মানুষের কুশল জানার কোনো আগ্রহ আমার নেই।
তুমি জান্নাতে না জাহান্নামে থাক, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যে চ্যাপটার ক্লোজ করে দিয়েছি, তা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা আমার একদমই অপছন্দ। আমি চাকরি নিয়ে, সংসার নিয়ে, জীবন নিয়ে যথেষ্ট ভালো আছি। সেটা বুঝি তুমি সইতে পারছো না। তাই না? না হলে তোমার এমন ভীমরতি হয় কী করে?
বুঝতে পারছি, তুমি বেশ সুখে আছো। শান্তিতে আছো। ভালো আছো। এটা জেনে আমারও খুব ভালো লাগছে। তুমি ভালো থাকো, সেটা আমি মনেপ্রাণে কামনা করি।
সেটাই যদি চাইবে, তাহলে ফেসবুকে তুমি এসব আজেবাজে কথা কেন লিখলে? এটাই কি আমাকে ভালো থাকতে দেওয়ার নমুনা?
কোথায় আজেবাজে কথা লিখলাম? তুমি কি আমার লেখা পড়েছো?
তোমাকে আমি আমার মন থেকে চিরতরে মুছে ফেলে দিয়েছি। তোমার কোনো ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। তোমার লেখা আমি পড়তে যাবো কোন দুঃখে? তুমি আমার ফেসবুকে নেই। আমার ফেসবুকে তোমার ঢোকার অধিকারও নেই।
তাহলে তুমি কীভাবে জানলে আমি কী লিখেছি?
তুমি তো একটা বুদ্ধুই রয়ে গেছ। এটা জানা কি খুব কঠিন কিছু? তোমাকে চেনে, আমাকে চেনে, এমন মানুষ কি দুনিয়ায় নেই? তাদের কেউ কেউ কি আমাদের ফেসবুকে থাকতে পারে না?
তা তো পারেই। এমন অনেকেই হয়তো আছে। কিন্তু তুমি নিজে না পড়েই এতটা ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে?
তুমি তো একটা মিনমিনে শয়তান। নিজেকে খুব চালাক-চতুর মনে করো। অথচ তোমার মনোভাব সবাই বুঝতে পারে। তোমার লেখায় কি বুঝাতে চেয়েছো, তা কেউ বুঝতে পারবে না?
তা পারবে না কেন? আমি তো আর কমলকুমার মজুমদার কিংবা আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মতো দুরূহ ভাষায় লিখি না। আমি জলবৎ তরলং ভাষায় লেখার চেষ্টা করি।
তাহলে? তুমি যে আমাকে নিয়ে লিখেছো, এটা তো আর মিথ্যে নয়। যারা আমাদের দুজনকে চেনে, তারা তো ঠিকই বুঝতে পেরেছে। পেরেছে বলেই আমাকে জানিয়েছে।
আচ্ছা, একজনের সঙ্গে আরেকজন মানুষের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও সবটাই কি মুছে যায়? তারা তো আর পরস্পরের শত্রু নয়। সম্পর্ক ছিল। এখন হয়তো নেই। তার মানে তারা কথা বলতে পারবে না, দেখা করতে পারবে না, স্মৃতিচারণ করতে পারবে না, এটা তো ঠিক নয়। যে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, কত কত আনন্দময় সময় কেটেছে, মনোমালিন্যও নিশ্চয়ই হয়েছে, তার ভালো-মন্দ জানার ইচ্ছে তো হতেই পারে। মানুষ তো আর স্লেট নয়, চক দিয়ে লেখা মুছে ফেললেই সব ধবধবে পরিষ্কার হয়ে যাবে। অস্বীকার করছি না, কেউ কেউ হয়তো অতীতটাকে দিব্যি ভুলে থাকতে পারে কিংবা থাকার অভিনয় করে। কিন্তু সবাই তা পারে না। পারে না বলেই স্মৃতিগুলো ফিরে ফিরে আসে। সেই স্মৃতিচারণ কি করা যাবে না?
আমাকে নিয়ে তোমার স্মৃতিচারণ করতে হবে কেন? তোমার কি স্মৃতির এতই অভাব পড়েছে?
স্মৃতি কাকে কখন কীভাবে মথিত করবে, তা কি কেউ বলতে পারে? তাছাড়া তোমার স্মৃতি কি এত সহজেই বিস্মৃত হওয়া যায়?
কেন যাবে না? আমার জীবনে তো তোমার কোনো অস্তিত্ব নেই। কোনো স্মৃতিও নেই।
এটা তো তুমি কথার কথা বলছো। আমার স্মৃতি কি তুমি কখনো ভুলতে পারবে?
না পারার কী আছে? যদি স্মৃতিতাড়িত হতাম, তাহলে তোমাকে আমার ফেসবুকে ব্লক করে রাখতাম না। প্রকৃত অর্থেই তোমার সঙ্গে আমি কোনো রকম যোগাযোগ রাখতে চাইনি। রেখেছি?
তা হয়তো রাখনি। যোগাযোগ না করলেই যে তোমার জীবনে আমার কোনো স্মৃতি থাকবে না, সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায় কি?
তুমি কি আমার মনের মধ্যে বসে বসে আমার স্মৃতির নজরদারি করো নাকি? আমি বলছি, তোমাকে নিয়ে আমার কোনো স্মৃতি নেই। অথচ তুমি জোরজবরদস্তি করে নিজের স্মৃতির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছো। এটা কেমন কথা?
আমি জোর করে কোনো কিছু আদায় করতে চাইছি না। তুমি ভালো করেই জানো, সেটা আমার দস্তুর নয়। আমি তোমাকে গভীরভাবে জানি বলেই তোমার মনের কথা কিছুটা হলেও অনুমান করতে পারি।
তুমি কী পারো, কী পারো না, তা নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক আগেই চুকেবুকে গেছে। অতীতের সেই আমি আর নেই। তোমার সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর আমি নিজেকে অনেকখানি বদলে ফেলেছি। বর্তমান জীবন নিয়ে আমাকে অত্যন্ত ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়। ফেলে আসা দিন নিয়ে স্মৃতিচারণ করার মতো অবকাশ অন্তত আমার নেই।
নিজেকে হয়তো পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু অন্তঃকরণকে কি বদলে ফেলা যায়? তাহলে তো সুস্থ, সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব নয়।
কী সম্ভব, কী সম্ভব নয়, এত কিছু তোমাকে ব্যাখ্যা করতে পারবো না। সেই দায়ও আমার নেই। তা ছাড়া আমাকে নিয়ে তোমার এত গবেষণা করার দরকার নেই। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।
আমি তো তোমার কোনো সমস্যা করছি না। এর মধ্যেই কখনো তোমাকে বিব্রত করিনি। যোগাযোগ করার একদমই ইচ্ছে হয়নি, তা বললে হয়তো সত্যের অপলাপ হবে। ইচ্ছেটাকে নির্মমভাবে দমন করেছি। তুমি নিজ থেকে ফোন করায় আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। তোমার সঙ্গে কত দিন পর কথা হচ্ছে।
তোমার আনন্দের জন্য আমি ফোন করিনি। তুমি ভালো করেই জানো, তোমাকে আমি মোটেও পছন্দ করি না। বাধ্য হয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলতে হচ্ছে। তোমার ফেসবুক স্ট্যাটাস আমার ও আমার পরিবারের অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা জানানোর জন্য বাধ্য হয়ে ফোন করেছি। তোমার স্বভাব তো আর বদলাবে না। কোনো কিছু লেখার সময় তো তোমার কোনো বোধ থাকে না। কার কি ক্ষতি হলো, সেই হুঁশও থাকে না। তবে তোমার কারণে কারও সংসার ভেঙে যাক, সেটা বোধকরি তুমি চাইবে না। এতটা অধঃপতন নিশ্চয়ই তোমার হয়নি।
তার মানে আমার প্রতি তোমার আস্থা ও বিশ্বাস আজও অটুট আছে?
এমনটা কেন মনে হলো?
তা না থাকলে তো তুমি আমাকে ফোন করতে না। অনুরোধও করতে না। তাই না?
আস্থা ও বিশ্বাস তো সেই দিনই হারিয়েছি। সেটা আর কখনও ফিরে আসবে না। তোমার জন্য আমার সংসার তছনছ হতে চলেছিল। পরিচিত পরিমণ্ডলের সবার কাছে খারাপ হয়ে যাচ্ছিলাম। অনেক কষ্টে সংসারটা টিকিয়েছি। পুরানো সেই ক্ষত আমি আর ফিরিয়ে আনতে চাই না। তবে তুমি কথা দিয়েছিলে, আমার কোনো ক্ষতি করবে না। সেটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ফোন করেছি। তুমি কথার বরখেলাপ করবে, এটা আমি ভাবতে পারিনি।
তোমাকে দেওয়া আশ্বাস আমি কখনও ভুলিনি। তোমাকেও ভুলতে পারবো না। এটা তুমি ভালো করেই জানো। তাহলে এমন কথা বলছো কেন?
আজকাল কাউকে বিশ্বাস করা যায় না। তোমাকে তো একদমই করা যায় না। তুমি আমাদের সম্পর্কটাকে পণ্য করেছো। দুনিয়ার মানুষকে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানিয়েছো। প্রতিশ্রুতি দিলেও তুমি যে বদলাবে না, তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। বদলে গেছো বলেই না ফেসবুকে আমাকে জড়িয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছো।
তোমার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যে গল্পটা লিখেছিলাম, সেটা যে দুই পরিবার জানতে পারবে এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটা আসলে অনুধাবন করতে পারিনি৷ পারলে লিখতাম না। লেখার ক্ষেত্রে আমার আরও কৌশলী হওয়া উচিত ছিল।
তুমি তো কখনো পরিণাম চিন্তা করো না। এ জন্যই তোমাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। তোমার সঙ্গে আমাকেও অনেক লাঞ্ছনা-গঞ্জনা-যাতনা সইতে হয়েছে। তোমার কাছ থেকে সরে গিয়ে রেহাই পেয়েছি। না হলে আমার জীবনটা একদমই ছারখার হয়ে যেত।
আসলে গল্পে অনুপুঙ্খ বর্ণনা দেওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি। আরেকটু রাখঢাক করে লিখলে কেউ ঘুণাক্ষরে বুঝতেই পারতো না। তখন তো সবে গল্প লেখা শুরু করেছিলাম। সাহিত্য সংকলনে প্রকাশিত আমার লেখা আমাদের পরিচিত গণ্ডির কারও নজরে আসবে, এটা আমি ভাবতেই পারিনি।
তুমি তো বরাবরই আত্মবিশ্বাসহীন একজন মানুষ। নিজের কোনো কাজের প্রতি আস্থা পাও না। লেখালেখিটাও গুরুত্ব দিয়ে করলে না। অথচ লেখা পড়েই না তোমার প্রেমে হাবুডzবু খেয়েছিলাম। তা ছাড়া কোনো কিছুই তো ভেবেচি‡ন্ত করো না। থাক, সেসব পুরোনো প্যাঁচাল পাড়ার জন্য আমি যোগাযোগ করিনি। যদিও তোমার আজও বোধোদয় হলো না। এ কারণে ফের ঝামেলা পাকাতে চাইছো। তুমি একটা অসভ্য ও বদ লোক। তোমার কোনো পরিপক্বতা এলো না। এই বয়সে কেউ নোংরা পাঁক ঘাঁটাঘাঁটি করে? তুমি নিজে নিজে যা ইচ্ছে করো, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমাকে ডুবাতে চাইছো কেন?
তুমি কিন্তু একটুও বদলাওনি। আগে যেমন ছিলে তেমনই রয়ে গেছ।
কী বলতে চাইছো?
কান নিয়ে গেছে শুনে চিলের পেছনে দৌড়ানো স্বভাবটা তোমার গেল না। কোনো যাচাই-বাছাই না করে সবকিছু সহজেই বিশ্বাস করে ফেলো। আমি কী লিখেছি, সেটা আগে পড়ে দেখো। তারপর না হয় আমাকে গালমন্দ করো।
আমাকে যে বলেছে, সে মিথ্যা বলবে না। তাছাড়া আমি তোমার লেখা পাবো কোথায়?
যে তোমাকে জানিয়েছে, সেও তো তোমাকে পুরো লেখাটি পাঠাতে পারতো। যাক, তোমার ইমেইল নাম্বার নিশ্চয়ই আগেরটাই আছে। স্ক্রিন শট পাঠিয়ে দিচ্ছি। কী লিখেছি এখনই পড়ে দেখতে পারবে।
আচ্ছা, পাঠাও।
‘একদা গভীর আবেগ নিয়ে ভালোবাসার একটা গল্প লিখেছিলাম। গল্পের যে জ্বালামুখ আছে, সেটা কল্পনা করতে পারিনি। সেই গল্প প্রকাশিত হওয়ার পর তা আগুন হয়ে আমাদের ভালোবাসাকে পুড়িয়ে দেয়। যদিও আমরা আগুন নিয়েই খেলেছি। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা হয়তো একটা অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলাম। সম্পর্কের পরিণতি কী হতো, আমরা জানতাম না। তবে একে অপরকে ভালোবাসায় কোনো ঘাটতি ছিল না। আমাদের দেখে মনে হতো, ‘মোরা আর জনমে হংস-মিথুন ছিলাম/ছিলাম নদীর চরে/যুগলরূপে এসেছি গো/আবার মাটির ঘরে। ’ আর সেই ভালোবাসাকে চিরায়ত করে রাখার জন্য শব্দ দিয়ে গেঁথেছিলাম একটি মালা। সেই মালার সৌরভে ছুটে আসা বিষধর সাপ এমনভাবে ছোবল দিয়েছে, যা আমাদের দুজনের জীবনকে অনেকটা লন্ডভন্ড করে দেয়। আমরা একে অপরের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যাই। বিচ্ছিন্ন হলেও বুকের মধ্যে থাকা ভালোবাসার সলতে কখনো নিভে যায়নি। সত্যিকার ভালোবাসা চিরকাল সজীব থাকে। আমি জানি না, তুমি এখন কোথায় আছো? কেমন আছো? তোমার হৃদয়ে কি সেই ভালোবাসা নেই?’
তুমি তো কোনো কিছুই বাদ রাখোনি। এই স্ট্যাটাসের সঙ্গে শুধু দুজনের ভালোবাসার গোপন ছবি দিয়ে দিলে ষোলোকলা পূর্ণ হতো। অসভ্য কোথাকার।
কী যে বলো না তুমি? আমি তো কোনো নাম উল্লেখ করিনি। কত আগের কথা। কেউ তো এখন বুঝতেই পারবে না।
তোমার যত সব আলতু-ফালতু কথা। বুঝতে না পারলে আমি জানলাম কীভাবে?
আমাদের চেনে এমন কেউ কি তোমাকে জানিয়েছে?
চেনাজানা মানুষেরা যদি জেনে যায়, তাহলে দূরের কে জানলো কি জানলো না, তাতে আর কী আসে যায়?
দেখো, এখন আর জীবন নিয়ে ছেলেখেলার সময় নয়। যা অতীত হয়ে গেছে, তা নিয়ে জল ঘোলা করে আর কী হবে? তুমি ভালো থাকো। আমাকেও ভালো থাকতে দাও। এমন কিছু লিখো না, যাতে আমার সাজানো-গোছানো সংসারটা ধ্বংস হয়ে যায়।
তাহলে আমাদের জীবনে কত কত গল্প আছে। সেই গল্প কি আর লেখা হবে না?
একটা গল্পের ঝড়ো হাওয়ায় যেভাবে আমাদের জীবন এলোমেলো হয়ে যায়, তারপরও তুমি তা নিয়ে গল্প লিখতে চাও?
আসলে আমি তো শুধু একটু-আধটু লিখতে পারি। লিখতে যদি বারণ করো, তাহলে আমার জীবনে আর কী থাকবে?
তোমার জীবনে কিছুই থাকবে না। তুমি এমন একজন অবিশ্বাসী মানুষ, কারও আপন হওয়ার যোগ্যতা তোমার নেই। এমনকি তোমার লেখা গল্পও তোমাকে বিশ্বাস করে না।
তার মানে আমার প্রতি তোমার কোনো ভালোবাসা নেই? তোমার-আমার সম্পর্ক কি পুরোপুরি বায়বীয়? তোমার কাছে কি এর কোনো গুরুত্ব নেই? আমার লেখা তোমার হৃদয়ে কি একটুও আঁচড় কাটতে পারেনি? ঠিক আছে, তুমি যখন আমাকে এত অপছন্দ করো, এত অবিশ্বাস করো, এত অবজ্ঞা করো, আমি আর লিখবো না। আর কখনো তোমার মনস্তাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবো না। আর যা যা করেছি, পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।
এই ফাজিল কাঁদছো কেন?
কোথায় কাঁদছি? মোটেও কাঁদছি না।
তোমার মেয়েলি স্বভাব আজও বদলালো না। এত বয়স হলো, সেই আগের মতোই রয়ে গেছো। শোনো, আমার একটা শর্ত রাখবে?
শর্ত! কীসের শর্ত?
এত কথা বলো কেন? রাখবে কি না বলো?
তুমি বললে রাখতে তো হবেই।
তুমি তো আমাকে চেনো। রাগ হলে আমার হুঁশ থাকে না। রাগ করে তোমাকে আমার ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছিলাম। সেটা খুলে দিচ্ছি। এখন থেকে তুমি যা কিছু লিখবে, তার লিঙ্ক আমার ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেবে। কোথায় কি ছাইপাস লেখো, আমাকে তো জানতে হবে।
তুমি আমার লেখা পড়বে!
ওপাশ থেকে কল কেটে দেওয়ায় কোনো উত্তর পাওয়া যায় না।
শান্ত পুকুরে ঢিল ছুড়লে যেমনভাবে বয়ে যায় মৃদু মৃদু ঢেউ, তেমনিভাবে বুকের ভেতর দোল খেতে থাকে চাপা একটা খুশির উচ্ছ্বাস।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন