ভালোবাসা তো চিরকালের অনিঃশেষ এক আখ্যান। তার শুরু আছে। শেষ নেই। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, ‘মধুর, তোমার শেষ যে না পাই‘। এ কথা যখন লিখছি, তখনও ভালোবাসার সম্মোহন নিয়ে মিলন ঘটছে চার চোখের। কারো না কারো হৃদয়ে অঙ্কুরোদগম ঘটছে ভালোবাসার বীজ। ভালোবাসা অনিবার্য। অপ্রতিহত। অপ্রতিদ্বন্দ্বী। অন্তহীন এর উৎস। ঝরনা থেমে যেতে পারে। নদী শুকিয়ে যেতে পারে। জনপদও হারিয়ে যেতে পারে। ভালোবাসার ফল্গুধারা নিরন্তন বয়ে যায়।
মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই ভালোবাসার সূত্রপাত। সেই ধারা চলছে। মানব সভ্যতা যতদিন আছে চলতেই থাকবে। নানা কালে, নানা যুগে, নানা সময়ে ভালোবাসার ধরন-ধারণ ছিল নানা রকম। রশি ভেবে সাপ বেয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার কথা এখন হয়তো আর ভাবা যায় না। তেমনটি না হলেও ভালোবাসার জন্য মরীয়া ভাবটা এখনও আছে। বিপদের ঝুঁকি নিয়েও দেখা-সাক্ষাৎ হয়ে থাকে। বুকের মধ্যে কেমন কেমন করার অনুভূতি কিন্তু বদলে যায় নি। আকাশে মেঘ জমলে বিরহী মন প্রেয়সীর সান্নিধ্য খোঁজে। প্রিয়তমার মন আকুল হয় প্রিয়তমের জন্য। তবে প্রেক্ষাপট অনেকটাই বদলে গেছে। বদলেছে ভালোবাসা নিবেদনের ভঙ্গি। এই সেদিনও ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করাটা এত সহজ ছিল না। একটু কথা বলা, একটুখানি দেখা হওয়া ছিল অসম্ভব এক ব্যাপার। অনেক বেশি প্রতিকূলতা ছিল। ছিল হাজারো প্রতিবন্ধকতা। সব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে কেউ কেউ জয়ী হয়েছেন। কেউ না পাওয়ার যন্ত্রণা নিয়ে দেবদাস হয়ে জীবন অতিবাহিত করেছেন। কেউবা জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন ভালোবাসার বেদীমূলে।
তবে ভালোবাসায় মিলনের চেয়ে বিচ্ছেদ বেশি। তারচেয়ে বেশি বিরহ। রাধা-কৃষ্ণ, লাইলী-মজনু, রোমিও-জুলিয়েট তো উৎকীর্ণ হয়ে আছে ভালোবাসার চিরায়ত কাহিনী হিসেবে। আত্মত্যাগে সমুজ্জ্বল অমর সব প্রেম। সময়মতো যোগাযোগ না হওয়ায় ভালোবাসার মন্ত্রে উজ্জীবিত দুই প্রেমিক-প্রেমিকা রোমিও-জুলিয়েট কোনো রকম সংশয় ছাড়াই পান করেছেন ভালোবাসার গরল। অথচ যোগাযোগ করার জন্য প্রেমিক-প্রেমিকাদের এখন খুব বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হয় না। এখন তো মুঠোফোন আর ইন্টারনেট যোগাযোগটা করে তুলেছে সহজলভ্য। আর ফেসবুকের মতো ওয়েবসাইটগুলো সহজ করে দিয়েছে পথচলা। চোখের পলকেই যোগাযোগ করা যায়। দু’জনে চাইলে দেখা করাও খুব একটা কঠিন না। অনেকেই মনে করেন, এ কারণে ভালোবাসায় এখন আর গভীরতা নেই। ভালোবাসা হয়ে ওঠেছে রিমোট কন্ট্রোলের মতো। ভালো না লাগলে চ্যানেল বদলে দেওয়ার মতো করে বদলে যায় ভালোবাসার মানুষ। একজনকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয় প্রলুব্ধ মন। অনেকের ভালোবাসা চাইলেই যখন পাওয়া যায়, একজনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাটা হয়ে পড়ছে অচল প্রেমের পদ্য। কথা দিয়ে কথা না রাখাটাই হয়ে ওঠেছে রীতিমতো ফ্যাশন। যখন-তখন ভেঙে যাচ্ছে সম্পর্ক।
এত কিছুর পরও ভালোবাসার মানুষের জন্য হৃদয়ে যে আকুতি সেটা তো রয়েই যায়। এখনও বিরহ আছে। আছে বেদনাও। বুকের মধ্যে জমে কষ্টের মেঘ। সম্পর্ক ভেঙে গেলে কারো কারো জীবন হয়ে যায় এলোমেলো। শুধু ভালোবাসাই হারায় না, হারিয়ে যায় বিশ্বাস। বিশ্বাস ভঙ্গের ঘটনা যত বাড়ছে, বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা। সাহিত্যের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ ভালোবাসায়। কত না গল্প, কত না কবিতা, কত না লেখালেখি। ভালোবাসার জন্য অমর হয়ে আছে কত না সৃষ্টি। কত না কীর্তিগাথা। শুধু সাহিত্য কেন, জীবনের কোথায় ভালোবাসা নেই? ভালোবাসা ছাড়া উৎসাহ-উদ্দীপনা-উদ্যম-প্রেরণা থাকে না। সেটা না থাকলে জীবন হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, নির্জীব, নিষ্প্রভ। থাকে না সৃষ্টি বা নিবেদনের আকুলতা। বিজ্ঞান কেড়ে নিয়েছে আবেগ, দিয়েছে বেগ। ভালোবাসা ছাড়া কি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা সম্ভব? মোটেও না। তবে নীল খামে কিংবা বইয়ের ভাঁজে এখন আর খুব একটা চিঠি আদান-প্রদান হয় না। কবি মহাদেব সাহার মতো কে আর আকুতি নিয়ে বলবেন, ‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও/ আঙ্গুলের মিহিন সেলাই/ ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,/ এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো/ অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।’ চিঠি পাওয়ার এ আনন্দ এখন বোধহয় খুব একটা আপ্লুত করে না। ব্যস্ত এই সময়ে অনেক সময় নিয়ে কাগজে-কলমে চিঠি লেখা, দুরু দুরু বক্ষে পৌঁছে দেওয়ার ঝামেলায় কে আর যেতে চায়? ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেও এখন প্রযু্িক্তর জয়জয়কার। মুঠোফোনে, ইন্টারনেটে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে ভালোবাসায় জড়ানো শব্দের মায়াজাল। এর অনেকটাই হারিয়ে যায়। রয়ে যায় খুবই কম। ভালোবাসা নিয়ে অনেক লেখালেখি হলেও জীবদ্দশায় প্রেমিক-প্রেমিকরা প্রকৃত ঘটনা খুব একটা তুলে ধরতে পারেন না। হয়তো অনেক সময় জানাজানি হয়ে তুলকালাম হয়। অনেক ক্ষেত্রে মিলনও হয়। কিন্তু ভালোবাসার পাত্র-পাত্রীরা নিজেদের কথা চাউর করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী বা সাহসী হতে পারেন না। সমাজের ভ্রুকুটির কাছে পরাভব মানতে হয়। কেউ কেউ করলেও অনেক পরে ঘটনার নির্যাসটুকু তুলে ধরেছেন। তাতে সত্যটুকু থাকে না।
যে কারণে ভালোবাসার কত কত ঘটনা আড়ালে পড়ে যায় কিংবা হারিয়ে যায়। এ সমাজে ভালোবাসাকে খুব একটা সম্মতি দেওয়া হয় না। নিজে প্রেম করেও অন্যের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে কোনো যুক্তির প্রয়োজন হয় না। তারপরও যেটুকু প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তা কেবলই অবিবাহিতদের। বিবাহিতদের ভালোবাসাকে দেখা হয় পাপ হিসেবে। যেন বিবাহিত হয়ে গেলে হৃদয়টা পাথর হয়ে যায়। তার আর কাউকে ভালো লাগতে পারবে না। ভালোবাসা থাকবে না। অবদমিত ভালোবাসা নিয়ে কাটাতে হবে চিরকাল। অথচ ভালোবাসা তো একটি আবেগগত ব্যাপার। সেটা কখন, কোথায়, কীভাবে, কার সঙ্গে ঘটবে, সেটা কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। দেশবরেণ্য শিল্পী রুনা লায়লার একটি জনপ্রিয় গান তো এমন, ‘প্রেমের এই ফাঁদ পাতা ভুবনে কে কোথায় ধরা পড়ে কে জানে’।
পরকীয়া ভালোবাসা তো তেমন একটি। এটি এমন একটি বিষয়, একে স্বীকার করা যায় না। আবার অস্বীকার করারও উপায় নেই। পরকীয়া ভালোবাসা স্বীকৃতি পেয়েছে লেখকদের কলমে। লোকসাহিত্যের অন্যতম আকর্ষণ তো পরকীয়া প্রেম। বৈষ্ণব শাস্ত্রের মতবাদই তো এটি। মরমী কবিরা তো এর চর্চা করে এসেছেন। বাউল লালন শাহও ছিলেন এর অনুসারী। যুগে যুগে বন্দিত হয়েছে পরকীয়া প্রেম। কাব্যে, সাহিত্যে, সংস্কৃতিতে। বাস্তবে এমনটি হলে অনেকেরই কুঁচকে যায় ভ্রু। তারপরও থেমে নেই পরকীয়া। বরং অতীতের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে। আড়ালে, আবডালে, গোপনে চলছে সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ এই প্রেম। এর সংখ্যা নেহাত মন্দ নয়। সমাজের চোখে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হওয়া পরকীয়া প্রেম নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা সম্ভব হয় না। জানা যায় না এই প্রেমের একান্ত কথামালা। অথচ এ নিয়ে কোথাও কিছু জানা গেলে কিংবা লেখা হলে তাতে কারো আগ্রহের কমতি থাকে না। তবে পরকীয়া প্রেমের কারণে ঘটেছে অনেক নোংরামিও। অবশ্য এমনটি তো সবক্ষেত্রেই ঘটে। তাতে কি থেমে আছে কোনো কিছু? আধুনিক কবি তো সাহসিকতার সঙ্গে লিখেছেন, কী হবে বাড়ি ফিরে?/তার চেয়ে রোদ মাখি ছায়া মাখি/সবুজ ঘাসেদের ভালবাসায় বসি দু’দণ্ড, চলো।/অথবা হেঁটে বেড়াই নির্জন কোনও বিকেলের বুক/আমার আঙুলে লেগে থাকুক তোমার আঙুলের সুগন্ধী।/কী হবে সংসার খেলে?/বেহিসাবি হয়ে উড়িয়ে দিই সব কৃপণতা, কিছু সময়/চলো, পৃথিবী ভুলে ভালবাসা মাখি অল্পখানি, নিস্পাপ দু’জনে।/কী হবে ভয় পেয়ে?/ ঝড়ের হাওয়া এলই বা মৌসুমির মতো/শক্ত হৃদয়ে ধরে থেকো প্রেম/গভীর হোক ভালবাসা/জয় করে দু’জনার কঠিন সময়। (পরকীয়া/সমিত ভৌমিক)।
প্রেম গড়ে ওঠতে পারে নানাভাবে। তবে ইদানিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে প্রযুক্তি। এখন তো প্রেম চলাকালে টেলিফোন, মোবাইলে কথা হয় দিনের পর দিন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দেখা-সাক্ষাতে হয় কত না কথা। আবেগী সেই কথামালা হারিয়ে যায়। কবির ভাষায় : ‘আমাদের সেই কথোপকথন, সেই বাক্যালাপগুলি/ টেপ করে রাখলে/ পৃথিবীর যে-কোনো গীতি কবিতার/ শ্রেষ্ঠ সঙ্কলন হতে পারতো।’ (প্রেমের কবিতা/মহাদেব সাহা)।
এত কিছুর পরও ভালোবাসার মানুষের জন্য হৃদয়ে যে আকুতি সেটা তো রয়েই যায়। এখনও বিরহ আছে। আছে বেদনাও। বুকের মধ্যে জমে কষ্টের মেঘ। সম্পর্ক ভেঙে গেলে কারো কারো জীবন হয়ে যায় এলোমেলো। শুধু ভালোবাসাই হারায় না, হারিয়ে যায় বিশ্বাস। বিশ্বাস ভঙ্গের ঘটনা যত বাড়ছে, বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা। সাহিত্যের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ ভালোবাসায়। কত না গল্প, কত না কবিতা, কত না লেখালেখি। ভালোবাসার জন্য অমর হয়ে আছে কত না সৃষ্টি। কত না কীর্তিগাথা। শুধু সাহিত্য কেন, জীবনের কোথায় ভালোবাসা নেই? ভালোবাসা ছাড়া উৎসাহ-উদ্দীপনা-উদ্যম-প্রেরণা থাকে না। সেটা না থাকলে জীবন হয়ে পড়ে নিষ্প্রাণ, নির্জীব, নিষ্প্রভ। থাকে না সৃষ্টি বা নিবেদনের আকুলতা। বিজ্ঞান কেড়ে নিয়েছে আবেগ, দিয়েছে বেগ। ভালোবাসা ছাড়া কি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা সম্ভব? মোটেও না। তবে নীল খামে কিংবা বইয়ের ভাঁজে এখন আর খুব একটা চিঠি আদান-প্রদান হয় না। কবি মহাদেব সাহার মতো কে আর আকুতি নিয়ে বলবেন, ‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও/ আঙ্গুলের মিহিন সেলাই/ ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,/ এটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো/ অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।’ চিঠি পাওয়ার এ আনন্দ এখন বোধহয় খুব একটা আপ্লুত করে না। ব্যস্ত এই সময়ে অনেক সময় নিয়ে কাগজে-কলমে চিঠি লেখা, দুরু দুরু বক্ষে পৌঁছে দেওয়ার ঝামেলায় কে আর যেতে চায়? ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেও এখন প্রযু্িক্তর জয়জয়কার। মুঠোফোনে, ইন্টারনেটে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে ভালোবাসায় জড়ানো শব্দের মায়াজাল। এর অনেকটাই হারিয়ে যায়। রয়ে যায় খুবই কম। ভালোবাসা নিয়ে অনেক লেখালেখি হলেও জীবদ্দশায় প্রেমিক-প্রেমিকরা প্রকৃত ঘটনা খুব একটা তুলে ধরতে পারেন না। হয়তো অনেক সময় জানাজানি হয়ে তুলকালাম হয়। অনেক ক্ষেত্রে মিলনও হয়। কিন্তু ভালোবাসার পাত্র-পাত্রীরা নিজেদের কথা চাউর করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী বা সাহসী হতে পারেন না। সমাজের ভ্রুকুটির কাছে পরাভব মানতে হয়। কেউ কেউ করলেও অনেক পরে ঘটনার নির্যাসটুকু তুলে ধরেছেন। তাতে সত্যটুকু থাকে না।
দু:খজনক হলেও সত্যি, চাইলেও সে কথাগুলোকে এখন আর পাওয়া যাবে না। তবে আগামীতে প্রযুক্তির যখন আরো জয়জয়কার হবে, তখন হয়তো এ কথাগুলোকে ফিরে পাওয়া যেতে পারে। এমনকি পাওয়া যেতে পারে ভিডিও ফুটেজও। সম্পর্ক থাকার সময় হয় অনেক মেসেজ লেন-দেন। সেগুলোও সংরক্ষিত হয় না। হলে বলা যেতে পারতো, ‘এর চেয়ে ভালো প্রেমের কবিতা আর কী লেখা হবে’। কথোপকথন, চ্যাটিং ও নেটের মাধ্যমে যে চিঠিগুলো বিনিময় হয়, সেগুলো একদমই অকিঞ্চিৎকর নয়। তা প্রকাশিত হলে অনুধাবন করা যেতে পারতো সম্পর্কের উত্থান-পতন। তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠতে পারতো হাল আমলের ভালোবাসার গতি-প্রকৃতি। সমাজবিদরা এ থেকে পেতে পারতেন ভাবনার হরেক উপাদান। অতীতে লেখা ভালোবাসার গোপন চিঠিগুলো এখন কত গুরুত্ব নিয়ে প্রকাশিত হয়। গবেষণা হয়। অথচ একান্ত কথাগুলো, ইন্টারনেট কেন্দ্রিক নিভৃতের লেখাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। যদিও কবি নির্মলেন্দু গুন অপ্রকাশিত প্রেমের মহিমাই ব্যক্ত করেছেন। তিনি মনে করেন, ‘যেসব নারীকে আমি গোপনে ভালোবেসেছি, তাদের সঙ্গে/আমার কখনও বিচ্ছেদ ঘটেনি।/ পক্ষান্তরে আমার প্রকাশিত প্রেমসমূহ/পূর্ণ হয়েছে বেদনায়, বিচ্ছেদে।/তাই মনে করি, প্রকাশিত প্রেমের তুলনায় অপ্রকাশিত//গোপন প্রেমই ভালো।/যাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করবে, তাকে আমি গোপনে/ভালোবাসবো।/যাকে ভালোবাসি তাকে কখনও তা জানতে দেবো না।/ আমার প্রেম প্রত্যাখ্যান করার/কোনো সুযোগই সে পাবে না।/আমি তাকে ইচ্ছামতো ভালোবাসবো।/যতদিন খুশি, যতবার খুশি ভালোবাসবো।/এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে আমি ভালো আছি। শুধু/ভালো নয়, খুব ভালো আছি।/প্রেম নিয়ে আমার সকল উদ্বেগও উৎকণ্ঠার অবসান হয়েছে।/ প্রিয় নারীদের ভালোবেসে আমি এখন পরম স্বস্তিতে আছি/আমার আর কোনো ভয় নেই। প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে যেভাবেই হোক না কেন, গভীর গোপন নিষিদ্ধ ভালোবাসাকে এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। বরং জীবন যত কঠিন হচ্ছে, অসন্তুষ্টি যত বাড়ছে, বাড়ছে অপ্রাপ্তি, সম্পর্কগুলো তত বেশি বিস্তার ঘটছে। নানাভাবে মেলছে ডাল-পালা। বাড়ছে নিষিদ্ধ প্রেমের প্রলোভন। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার মতো কোনো বাধাই যেন আটকে রাখতে পারছে না, ‘ভালোবাসা পেলে সব লণ্ডভণ্ড করে চলে যাব/যেদিকে দু’চোখ যায়’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন